পেকুয়া প্রতিনিধি;

শিক্ষকদের ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠা ও জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে তিন দফা দাবি বাস্তবায়নের দাবিতে কক্সবাজারের পেকুয়ায় প্রাথমিক শিক্ষকদের উদ্যোগে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) দুপুরে পেকুয়া উপজেলা পরিষদ চত্বরে ‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ’—পেকুয়া উপজেলা শাখার আয়োজনে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে উপজেলার বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত শতাধিক সহকারী শিক্ষক-শিক্ষিকা অংশ নেন। সংগঠনের সদস্য সচিব ও গোঁয়াখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোহাম্মদ ইদ্রিসের সঞ্চালনায় কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন আহ্বায়ক ও ছালেহা কবির সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক, সোঁনাইছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শিবলী আজাদ ছোবহানী, হাজী ওবায়দুল হাকিম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সাজ্জাদ হোছাইন, পূর্ব গোঁয়াখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আজিজুর রহমান, উত্তর মেহেরনামা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ওমর ফারুক, শিলখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক শাহাদাত হোসাইন ও ফৈজুন্নেছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আবদু রহিমসহ আরও অনেকে।

বক্তারা বলেন, সহকারী শিক্ষকদের ১৩তম গ্রেড প্রদান ন্যায্যতার পরিপন্থী ও বৈষম্যমূলক। দেশের অন্যান্য সব দপ্তরে স্নাতক ডিগ্রিধারীদের দ্বিতীয় শ্রেণির মর্যাদা দেওয়া হলেও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা দীর্ঘদিন ধরে তৃতীয় শ্রেণির মর্যাদায় অবস্থান করছেন। বক্তাদের দাবি, “মানুষ গড়ার কারিগরদের উপযুক্ত মর্যাদা না দিলে প্রাথমিক শিক্ষার মান উন্নয়ন সম্ভব নয়।”

তারা আরও বলেন, বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে প্রাথমিক শিক্ষকদের সর্বোচ্চ সম্মান দেয়া হয়। অথচ বাংলাদেশের প্রাথমিক শিক্ষকদের দায়িত্ব ও কর্তব্য সীমাহীন হলেও তাদের প্রাপ্য মর্যাদা ও সুযোগ-সুবিধা কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে পৌঁছায়নি। শিক্ষক নেতারা জানান, সামাজিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্য দূরীকরণ, জীবনমান উন্নয়ন এবং রাষ্ট্রীয় মর্যাদা নিশ্চিত করতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের দশম গ্রেড প্রদানের কোনো বিকল্প নেই।

বক্তারা দাবি করেন, “তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষক দিয়ে দেশের প্রথম শ্রেণির নাগরিক তৈরি করা সম্ভব নয়। শিক্ষার ভিত্তি মজবুত করতে হলে শিক্ষককে মর্যাদা ও প্রণোদনা দিতে হবে।”

মানববন্ধনে জানানো হয়, প্রাথমিক সহকারী শিক্ষকদের তিন দফা দাবির মধ্যে রয়েছে, সহকারী শিক্ষকদের দশম গ্রেডে উন্নীতকরণ, চাকরির ১০ ও ১৬ বছরের উচ্চতর গ্রেড জটিলতা নিরসন, প্রাথমিক শিক্ষকদের শতভাগ পদোন্নতি নিশ্চিত করা।

এ সময় শিক্ষকরা প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করেন। আগামী রবিবার পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে শিক্ষকদের পক্ষ থেকে স্মারকলিপি হস্তান্তর করা হবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচিতে উপজেলার সকল সহকারী শিক্ষকদের উপস্থিত থাকার আহ্বান জানানো হয়।